Skip to main content

এ কালো সূর্যের কালো জ্যোৎস্নায় কালো বন্যায় ~ দাউদ হায়দার

জন্ম আমার কালো সূর্যের কালো জ্যোৎস্নার কালো বন্যায়
ভেসে এসেছি তোমাদের এই তিলোত্তমা শহরে
কল্পিত ঈশ্বর আমার দোসর; পায়ে তার ঘুঙুর; হৃদয়ে মহৎ পূজো
চুনকামে মুখবয়ব চিত্রিত; আমি তার সঙ্গি,
যেতে চাই মহীরুহের ছায়াতলে, সহি নদীজলে; ভোরের পবনে।
ঈশ্বর একান্ত সঙ্গি; জ্বেলেছি ধূপ লোবানের ঘরে। তার পায়ের ঘুঙুর সে
আমাকে পরিয়ে পালালো, আমি উঠলুম আমি।
ভেতরেও সে বাহিরেও সে; আমার আমি হয়ে চলেছি আমি,
মরণের নক্ষত্র দোদুল্যমান কালো ঘণ্টার রাজধানীতে বর্শার মতো দিন।

রাত্রির অলীক নটী, অন্ধদ্বন্দ্বে নাচায় ভাই; আমার বিশ্বাস ছিল
প্রতিধ্বণী নেই, তিমিরে আমার যাত্রা; দেখা হয় আলখেল্লায়
সজ্জিত মিথ্যুক বুদ্ধ; বসে আছে বোধিদ্রুমের ছায়াতলে;
যিশু আরেক ভণ্ড; মোহাম্মদ তুখোড় বদমাস; চোখে মুখে রাজনীতি,

আমি প্রত্যেকের কাছে পাঠ নিতে চাইলুম; তোমাদের চৈতন্যে যে লীলাখেলা
তার কিছু চাই এবেলা। দেখলো ঈশ্বর দেখলো আদম।
আদমের সন্তান আমি; আমার পাশে আমি?
আমি আমার জন্ম জানি না। কীভাবে জন্ম? আতুরের ঘরে কথিত
জননী ছাড়া আরে কে ছিল? আমায় বলে নি কেউ।
আমার মা শিখালো এই তোর পিতা, আমি তোর মাতা।
আমি তাই শিখেছি। যদি বলতো, মা তোর দাসী, পিতা তোর দাস;
আমি তাই মেনে নিতুম। কিংবা অন্য কিছু বললেও অস্বীকারের
উপায় ছিল না।

আমি আজ মধ্য যৌবনে পিতা মাতার ফারাক বুঝেছি। বুঝেছি সবই মিথ্যা

বুঝেছি কেউ কারও নয়; কেউ নয় বলেই তো বলি

একদিন সবকিছুই যাবে চলে (চলে যাবে)।

Every things passes, one day every thing will go yet

We shall not recognise each other, and indirect love

remain hesitant as the desires of life time shall roam

the winds and blue sky.

এই তো সনাতন নিয়ম; ব্যতিক্রম নেই পরিবর্জিত অজাত শত্রু আমার।

প্রেম সে কি? কোথায় থাকে? কার জরায়ু থেকে নেমে আসে?

কেউ নিঃসঙ্কোচে বলতে পারো?

বারবার আমি বেয়োগের চৈতন্যে বাহু রাখি। স্মৃতি আমার অকাল পাথর।

জীবে প্রেম? মানুষে মানুষে ভালবাসা? প্রেম অশ্রু আমার

ভোঁতা। এ্যরিষ্টোটল, প্লেটো, আমার চৈতন্যে; তাদের চৈতন্যই

আমার বিশ্বাস।

নীটসের কথাই ঠিক; ঈশ্বর মরেছে আমার শৈশবে,

অতএব সে আমায় ঘুঙুর পরিয়ে পালালে সে আজ নেই,

তার জারজ সন্তানেরা অলীকের চৌমাথায় বসে পাণ্ডুর প্রেমের কথা বলে।

লোক জমে, বাহবা দেয়; ঔষধ কেনে; ঘরে ফেরে; দেখি সব ফিকে।

আমি জনমে জনমে শূন্য গর্ভে ফিরে আসি।

নূপুর মিশ্রিত অধীর সঙ্গীতের বিরহের কাল বৈশাখীর শাশ্বতের করি না বন্দনা।

আমাতে উল্লাস আছে লগ্ন নেই; সার্থক বুদ্ধিতে বিষ্ণু দে আজ করিঃ

আমার প্রিয়; অপ্রিয় সুধীন দত্তও নয় বটে,

কিন্তু রবীন্দ্রনাথ এড়াতে পারেননি এ বড় দুঃখের কথা।

যুগল স্তনে যৌবন দেখা দিলে তুমি বল প্রেম স্মৃতি।

একি তোমার নিজস্ব অভিলাষ? মাঝে মাঝে রাত্রি কালে হেঁটে যাই;

কোথা যাই সঠিক জানি না।

পথ জানে না আমার গন্তব্য কোথায়; আমি তার কোন কেন্দ্রে গিয়ে

আশ্রয় নেবো। এমন মমতা দেখে খুঁজে ফেরে চরণ চিহ্ন; চরণ চিহ্ন

সহসা হারিয়ে যায়।

শোণিতে খেলা নেই নিস্ক্রিয় নিশ্চল।

আমি তোমায় খুঁজেছি; সীমান্তে আত্মদান করেছ কিনা জানি না,

মহাকাল আমার পদতলে। নিমীলিত চক্ষে আকাঙ্ক্ষার স্পষ্টতা।

পুরানে আমার বিস্ময়; কি করে অসাধ্য সাধন করা যেত?

আমার বন্ধুদের চেয়েও বুদ্ধিদীপ্ত? আপন বিশ্বাসে আমার কাটলো

মিথ্যা তাই বলি, প্রেম মিথ্যা, মিথ্যা, মিথ্যা।

সব কবিই একই ফুটবল নিয়ে ঘুরছেন গোল স্টেডিয়ামে, রেফারী নেই

হ্যান্ডবল, ফাউল ধরছেন কেউ? আমরা দর্শক কিছুই বুঝি না খেলা দেখি

আশা মিটে গেলেই ঘরে ফিরি। গোল করার কায়দাও মনে রাখি না।

কিন্তু সবাই তো চৌকস খেলোয়াড় বলটা কাটতে পারেন ভালো;

তবে কেন ঘুরছেন?

মহীনের ঘোড়ার সাথে জীবনানন্দের দেখা হোলো একদিন

মধ্যরাতে আমার সাথে পাল্লা দিয়ে হেরে গেলো-

মনে তার প্রেম ছিল?

মূল্যহীন মূল্যবোধের কতটুকু বিজয়?

আমি দৃষ্টির আড়ালে উচ্চরি নাঃ বলি বিশাল জনসভায়-

তিমিরে আমাদের যাত্রা; তুমি জানো না জানো কিছুই এসে যায় না

এই উড়ন চণ্ডীর, উড়নচণ্ডীরাই মহাপাগল, পাগলের কথার

দাম বিশ্ব ব্যাংকও জানে না।

সাবিত্রী তুমি কি বহ্নির কাছে নতজানু হবে? অমরত্ব হারাবে,

এসে আমার হাতে হাত রাখো; অমৃতের দিকে চোখ ফিরিও না

তোমায় সামনে বসিয়ে মন্থর করে এঁকে যাবো

সমস্ত শরীর চুল চিবুক।

এখন আকাবোকা সব শেষ

সামনে যে অন্ধকার আগামী উৎসবে আরো দ্বিগুণ হবে।

প্রতীক্ষায় লাভ নেই, আমার বক্ষে মাথা রাখো শোন আগমনী বার্তা

কালো মৃত্যুর দিন সমাগত,

তুমি শান্তির প্রেমের কথা বলো। বলেছে আদমের সন্তানেরা শান্তি কোনদিন

আসবে না, কৌতুক নয়। অন্ধ সংসারে সেই কোরে প্রেম।

পাতালে গিয়েছ কোন দিন? কিংবা আকাশ নীলিমায়?

দেখেছ এ্যাপোলো? মন্বন্তরে সেকি যায়নি ভেসে? স্বরচিত গানে

আনন্দ পাও? ইন্দ্রজাল লক্ষ কোরেছো কোনদিন?

বিজ্ঞাপন বড় সুন্দর একদিন কৃষ্টি হবে পায়রা আসবে কার ঘরে? কোন ঘরে

তোমারই স্মরণে?

তোমার মুখে স্তনে কিসের দাগ? ঘোমটায় কোথায় চলেছো তুমি?

পেছনে আমার ভাই; অন্ধ ছন্দে সেই কৃষ্ণ; রাধা নেই,

আমার পদপ্রান্তে নিঃসঙ্কোচে লুটাক আদমের সন্তান; ঈভের প্রেম

ফাঁদের অলীক প্রেমে আমি আলো সূর্যের কালো জ্যোৎস্নায় কালো বন্যায়

তোমাদের শ্বাশতীরে খুঁজে পাইনি। কেউ পায়না চলে গেছে,

সব চলে গেছে, চলে যায়; বুঝি তাই বলে যাই।

Even when our eyes meet shall not recognise each other

Even we walk past each other we shall not see. One day

Our bodies shall be together. One day we shall be

tern from the struggles of life.

We shall have the silent procession and move

towards a redbirth, and I shall call you again and

again. And when you do not answer I shall

go to that phanton land

when we shall stand face

in perfect union. One day

you and I shall go to that landscape. And

yet no one shall recognise other.

Comments

Popular posts from this blog

এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না - নবারুণ ভট্টাচার্য

যে পিতা সন্তানের লাশ সনাক্ত করতে ভয় পায় আমি তাকে ঘৃণা করি- যে ভাই এখনও নির্লজ্জ স্বাভাবিক হয়ে আছে আমি তাকে ঘৃণা করি- যে শিক্ষক বুদ্ধিজীবী কবি ও কেরাণী প্রকাশ্য পথে এই হত্যার প্রতিশোধ চায় না আমি তাকে ঘৃণা করি- আটজন মৃতদেহ চেতনার পথ জুড়ে শুয়ে আছে আমি অপ্রকৃতিস্থ হয়ে যাচ্ছি আট জোড়া খোলা চোখ আমাকে ঘুমের মধ্যে দেখে আমি চীৎকার করে উঠি আমাকে তারা ডাকছে অবেলায় উদ্যানে সকল সময় আমি উন্মাদ হয়ে যাব আত্মহ্ত্যা করব যা ইচ্ছা চায় তাই করব। কবিতা এখনই লেখার সময় ইস্তেহারে দেয়ালে স্টেনসিলে নিজের রক্ত অশ্রু হাড় দিয়ে কোলাজ পদ্ধতিতে এখনই কবিতা লেখা যায় তীব্রতম যন্ত্রনায় ছিন্নভিন্ন মুখে সন্ত্রাসের মুখোমুখি-ভ্যানের হেডলাইটের ঝলসানো আলোয় স্থির দৃষ্টি রেখে এখনই কবিতা ছুঁড়ে দেওয়া যায় ’৩৮ ও আরো যা যা আছে হত্যাকারীর কাছে সব অস্বীকার করে এখনই কবিতা পড়া যায় লক-আপের পাথর হিম কক্ষে ময়না তদন্তের হ্যাজাক আলোক কাঁপিয়ে দিয়ে হত্যাকারীর পরিচালিত বিচারালয়ে মিথ্যা অশিক্ষার বিদ্যায়তনে শোষণ ও ত্রাসের রাষ্ট্রযন্ত্রের মধ্যে সামরিক-অসামরিক কর্তৃপক্ষের বুকে কবিতার প্রত...