Skip to main content

গল্প ~তসলিমা নাসরিন

ভাজা মাছ উল্টে খেতে পারে না ধরনের এক ছেলে আমাকে
একদিন বলল---আমার খুব কষ্ট।
আমি তার ঘন চুলে নিবিড় আঙুল রেখে বললাম
---মাঠ জুড়ে সাদা জ্যোৎস্না নেমেছে, চল ভিজি।
চল মেঘলা ভোরে অরণ্য পেরোই। শীতলক্ষায় উলটো সাঁতার কাটি।
ছেলে বলল---বড্ড খিদে পায় আজকাল।
আমি তাকে সর্ষে বাটা ইলিশ, চিতল মাছের কোপ্তা,
চিংড়ির মালাইকারি আর আস্ত একটা মুরগির রোস্ট খেতে দিলাম।
খাবার পর একটা তবক দেওয়া পান।
খাওয়া হল। রাতে জ্যোৎস্নায় ভেজাও হল।
ভোরের অরণ্য পেরনো হল, ছেলের মনও হল ভাল
দুপুরের দিকে ভর-পেট এবং ভর-মন নিয়ে ছেলে বলল---যাই।
সেদিন হঠাৎ দেখি পাশের বাড়ির কিশোরীকে সে তার
খিদে ও কষ্টের কথা বলছে
কিশোরী তাকে বসতে দিচ্ছে, খেতে দিচ্ছে।

Comments

Popular posts from this blog

এ কালো সূর্যের কালো জ্যোৎস্নায় কালো বন্যায় ~ দাউদ হায়দার

জন্ম আমার কালো সূর্যের কালো জ্যোৎস্নার কালো বন্যায় ভেসে এসেছি তোমাদের এই তিলোত্তমা শহরে কল্পিত ঈশ্বর আমার দোসর; পায়ে তার ঘুঙুর; হৃদয়ে মহৎ পূজো চুনকামে মুখবয়ব চিত্রিত; আ...

এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না - নবারুণ ভট্টাচার্য

যে পিতা সন্তানের লাশ সনাক্ত করতে ভয় পায় আমি তাকে ঘৃণা করি- যে ভাই এখনও নির্লজ্জ স্বাভাবিক হয়ে আছে আমি তাকে ঘৃণা করি- যে শিক্ষক বুদ্ধিজীবী কবি ও কেরাণী প্রকাশ্য পথে এই হত্যার প্রতিশোধ চায় না আমি তাকে ঘৃণা করি- আটজন মৃতদেহ চেতনার পথ জুড়ে শুয়ে আছে আমি অপ্রকৃতিস্থ হয়ে যাচ্ছি আট জোড়া খোলা চোখ আমাকে ঘুমের মধ্যে দেখে আমি চীৎকার করে উঠি আমাকে তারা ডাকছে অবেলায় উদ্যানে সকল সময় আমি উন্মাদ হয়ে যাব আত্মহ্ত্যা করব যা ইচ্ছা চায় তাই করব। কবিতা এখনই লেখার সময় ইস্তেহারে দেয়ালে স্টেনসিলে নিজের রক্ত অশ্রু হাড় দিয়ে কোলাজ পদ্ধতিতে এখনই কবিতা লেখা যায় তীব্রতম যন্ত্রনায় ছিন্নভিন্ন মুখে সন্ত্রাসের মুখোমুখি-ভ্যানের হেডলাইটের ঝলসানো আলোয় স্থির দৃষ্টি রেখে এখনই কবিতা ছুঁড়ে দেওয়া যায় ’৩৮ ও আরো যা যা আছে হত্যাকারীর কাছে সব অস্বীকার করে এখনই কবিতা পড়া যায় লক-আপের পাথর হিম কক্ষে ময়না তদন্তের হ্যাজাক আলোক কাঁপিয়ে দিয়ে হত্যাকারীর পরিচালিত বিচারালয়ে মিথ্যা অশিক্ষার বিদ্যায়তনে শোষণ ও ত্রাসের রাষ্ট্রযন্ত্রের মধ্যে সামরিক-অসামরিক কর্তৃপক্ষের বুকে কবিতার প্রত...